December 22, 2024, 9:41 am
দৈনিক কৃুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অপহরণ করে মুক্তিপর্ণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল নামের এক বেসরকারী কৃষি ফার্মের কর্মকর্তাকে হত্যার অপরাধে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিষিদ্ধ ঘোষিত পুর্ব বাংলা কম্যুনিষ্ট পার্টির ১৬ ক্যাডারকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছে।
এদের মধ্যে ৩ জনকে আমৃত্যু, ৭ জনকে যাবজ্জীবন ও আরও ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হযেছে।
আজ (রোববার) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
আমৃত্যু সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর এলাকার কামাল হোসেন এর ছেলে ওয়াসিম রেজা (পলাতক), ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার কাটদাহ গ্রামের আলী জোয়ার্দ্দারে মানিক জোয়ার্দ্দার (পলাতক), দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের মৃত নুরু বিশ^াসের ছেলে হোসেল রানা।
যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া মশান গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে ইদ্রিস ওরফে মোটা জসিম (পলাতক), খন্দকার রবিউল ইসলামের ছেলে খন্দকার তৈমুর ইসলাম বিপুল (পলাতক), নুর বিশ^াসের ছেলে ফারুক চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মতিমিয়া রেলগেট চৌড়হাস এলাকার খন্দকার মোছাদ্দেক হোসেন মন্টু এর ছেলে উল্লাস খন্দকার, উদিবাড়ী আমিরুল ইসলামের ছেলে মনির (পলাতক), পূর্ব মজমপুর মৃত আব্দুল খালেক চৌধুরীর ছেলে বিপুল চৌধুরী, দৌলতপুর উপজেলার পচা ভিটা গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে আঃ মান্নান মোল্লা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সকল আসামীরা পুর্ব বাংলা কম্যুনিষ্ট পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী। নানা অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। অপহরন তার মধ্যে একটি। এরা নানাভাবে মানুষকে অপহরনস করে মুক্তিপণ আদায় করতো। এই ঘটনায় নিহদ যাশোরের শার্শার জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল ঢাকর মিরপুরে কারিতাসের এগ্রিকালচারাল ওয়ার্কশপ এন্ড ট্রেনিং স্কুল এর মাকেটিং ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। পাবনা জেলার সুমী নামে এক মেয়ের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সুমীর সাথে সন্ত্রাসী চক্রের সম্পর্ক ছিল। ২০০৯ সালের ২৩ অক্টোবর বিকাল পাঁচটার সময় জাহাঙ্গীরকে বিভিন্নভাবে প্রলোভিত করে অপহরণ করে দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামে ডেকে আনেন তারা এবং জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যদেরকে অপরিচিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে ছাড়াতে হলে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপর্ণ দাবী করে। পরে মুক্তিপণের দাবীকৃত অর্থ আদায়ের পরও ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসের ২৫ তারিখে রাতের বেলায় উপরোক্ত আসামীরা জাহাঙ্গীর হোসন মুকুলকে চর শালিমপুর হিসনানদীর পাড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ফপাুরক চেয়ারম্যানের জমিতে পুঁতে রাখে।
এ বিষয়ে ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখে দৌলতপুর থানায় নিহতের বড় ভাই ইলিয়াস কবির বকুল বাদী হয়ে ১৬জন আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ মার্চে তদন্তকারী কর্মকর্তা দন্ডবিধির ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, উপরোক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি হত্যা মামলা আছে বলে আদালত জানায়।
তৎকালীন এএসপি আলমগীরের বক্তব্য/
মামলাটির তদন্তে নেতৃত্বদানকারী তৎকালীন কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার বর্তমানে ট্যুরিস্ট পুলিশের হেডকোর্য়াটারে কর্মরত পুলিশ সুপার আলামগীর হোসেন কয়েকদফা অভিযান চালিয়ে আসামীদের চিন্থিত করে তাদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। পরে জ্ঞিাসাবাদের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এই রায়ের পর এসপি আলমগীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি দৈনিক কুষ্টিয়াকে বলেন হত্যাকান্ডের প্রায় কোন ক্লুই পাওয়া যাচ্ছিল না। একটি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার মধ্য দিয়ে এই ঘটনা বেড়িয়ে আসে। এ সময় একই সাথে আরো তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়। ও উদ্ধার করা হয় প্রচুর অস্ত্র। সকলা আসামীই এসব ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন।
এসপি আলমগীর কুষ্টিয়া থেকে সন্ত্রাস নির্মূলে দারুণ ভুমিকা রেখেছিলেন।
Leave a Reply